ধান ১টি কৃষি উৎকৃষ্ট অন্ন শস্য আর ধানের ডিমান্ড ভীষণ কারন ধান থেকেই চাউল আটা সৃষ্টি হয়। আজ ধানের বিজনেস এর সব ধরনের বুদ্ধি নিয়ে লিখব। আশাকরি অবিরাম পোস্ট পড়বেন এবং এ ধানের স্টক ব্যবসা হতে যেন আপনি কোন রকম লসে না পরে লাভের দিকে অগ্রসর হোন। অবশ্যই ধানের ব্যবসা লাভজনক ব্যবসা যদি সব কতিপয় ঠিক মত করেন। চলুন ধানের বিজনেসের সকল খুটিনাটি এক নজরে দেখে নেই।
ধানের ব্যবসা কি জন্য করবেন: ধান একটি কৃষিপ্রধান খাবার বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের মানব ধানের ওপর নির্ভর করে। নিশ্চয়ই ধান হতে চাল সৃষ্টি হয় বলেই। আমাদের দৈনন্দিন আহারে লিস্টে চাউল এবং আটার ওপর অবলম্বন করে থাকি এ দুইটি জিনিসের ওপর অবলম্বন করা মানেই ধানের ওপর অবলম্বন করা হচ্ছে। যেহেতু সকলেই ধানের ওপর অবলম্বন করে তাই ধানের ব্যবসা করে আমরা লাভজনক থেকে পারি।
ধান কেনার প্রক্রিয়া: আপনি ধানের বিজনেস করবেন কিন্তুু কেমন করে ধান কেনার প্রক্রিয়া চালু করবেন এটি না জানলে হবে না। আপনাকে সঠিক ধান ক্রয় করে স্টক করতে হবে। আর সঠিক ধান কিরকম এবং কোন ধানের কোন রকম ভ্যালু হয় সেগুলো আপনাকে ট্রেইনিং পক্ষান্তরে কারো মাধ্যমে জেনে নিতে হবে। বাংলাদেশে হাইব্রিড উফসি সহ নানা ধরনের ধান চাষ হলো আপনি ধানের নাম ও গ্রেট সব সময় বিবেচনা করবেন তার পর ধান কেনার জন্য নেমে যেতে পারেন।
কখন কোথায় ধান কিনবেন: আপনি ধান কিনবেন ঠিক সময়ে। আর বাংলাদেশে ধানের মরশুম প্রায় ২ বার হয়ে থাকে। আবার কোন কোন ক্যাটাগরি ৩ বার হয়ে থাকে। ধানের ঋতু যত বারেই হোক না কি জন্য আপনি ধানের ব্যবসা করার জন্য প্রত্যেক মৌসুমকে বেছে নিবেন। এতে সুবিধে হয় আপনি সাশ্রয়ী দামে ধান পেলেন অন্যদিকে কৃষকেরা তাদের সঠিক মূল্য পেয়ে গেল ও লাভের স্বাদ গ্রহন করার জন্য পারল। আপনি দুই ধরনের প্রক্রিয়াবল প্রয়োগ করে ধান কিনতে পারে।
বাজার থেকে: আপনি যদি অনেক ধান কেনার মনস্থির করেন তাহলে বাজার থেকে ধান কিনতে পারেন। গ্রামের প্রায় সব মার্কেটপ্লেসে হাটবার/বাজারবার (বাজারের দিন) সময় ধানের ব্যবসা হয়। সেখানে প্রত্যক চাষিরা ধান নিয়ে উপস্হিত হয়। আপনি ওই স্থান থেকে সমৃদ্ধ বংশের ধান কিনে ট্রাকে লোড করে শহরে নিয়ে এসে গুদামজাত করার জন্য পারেন
কৃষকের বাড়ি থেকে: আপনি আর ১টি পন্থা অবলম্বনের দ্বারা ধান কিনতে পারেন সেটা হল কৃষকের বাড়ি থেকে ধান কিনতে পারেন। অনেক কৃষক ধান মাড়াই করেই ধান বিক্রি করে। আপনি ধান ওঠার প্রথমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাখার জন্য পারেন। পরে যখন চাষি কক্ষে ধান তুলে নিয়ে যাবে তখন আপনি ওখান হতে ধান ক্রয় করে রাখতে পারেন। ধান কেনার টাইম যে সকল জিনিস স্মরণ করবেন সেগুলো হল শুকনা ধান কিনতে হবে। কাঁচা ধানও কিনতে পারেন।
মনে রাখার চেষ্টা করবেন কাঁচা ধান এবং শুকনা ধানের মাঝে ডিফারেন্স পর্যাপ্ত এবং দামেরও পার্থক্য রয়েছে। সেটা যে কোন গ্রেটের ধান হোক। শুকনা ধানে আপনাকে বহু কাজ করতে হবে না, বস্তা করেই সে সব ধান আপনি গুদামজাত করে রাখতে পারেন। আর কাঁচা ধান কিনলে আপনাকে রোদে শুকিয়ে তার পর গুদামজাত করার জন্য হবে। ধান শুনাকানোর জন্য আপনাকে পয়সা খরচ করতে হবে বিপরীত দিকে আপনার ধানের ওজন কমে যায় আসবে। এইজন্য এ বিষয়গুলো লক্ষ করবেন।
ধান গুদামজাত করার পদ্ধতি: আপনার ইতিমধ্যে ধান কেনাকাটা হয়ে গেছে ইদানিং গুদামজাত করতে হবে। এইজন্য আপনাকে ধান অনেকদিন যেন ভাল থাকতে পারে এইরকম ঠাঁই বেছে নিতে হবে। যেন রোদ বৃষ্টি পক্ষান্তরে ঝড়ের কারনে আপনার গুদামের ধান ঠিক থাকে এমন অবস্থান বেছে নিতে পারেন, জায়গাটি নিশ্চয়ই শুস্ক থেকে হবে। এর জন্য আপনি প্রাচিন নিয়মে ধান রাখার জন্য পারেন। প্রাচিন পদ্ধতি ধান রাখার জন্য বাশের বাকল কর্তৃক মাচা প্রস্তুত করে সেই মাচায় ধান রাখবেন। পক্ষান্তরে আপনি গ্রামের ল্যাংগুয়েজে ডুলি নামের এক ধরনের ধানের পাত্র পাওয়া যায় ইচ্ছে করলে সেখানেও রাখতে পারেন।
আধুনিক প্রক্রিয়ার দ্বারা ধান রাখতে হলে আপনাকে বৃহৎ রুম নিতে হবে। আর রুমটি পরিস্কার রাখতে হবে। রুম এরূপ জায়গায় নিতে হবে যেন আপনার ধানের গোডাউনে বন্যা বৃষ্টির পানি না উঠে আর ধানের গোডাউন এ ধান রাখার জন্য এবং বের করার জন্য যেন সুবিধে হয়। আপনি প্রথম ধানের বিজনেস চালু করলে আপনাকে আধুনিক উপায় গ্রহন করার জন্য হবে না। কারন গোডাউনের ভাড়া রক্ষনাবেক্ষন সহ পর্যাপ্ত টাকা হয়ে যাবে একারণে ১ম অবস্থায় আপনি প্রাচিন প্রক্রিয়ায় ধার সংরক্ষনে রাখুন।
কখন ধান বিক্রি করবেন: ধান বিক্রি করার উপযুক্ত সময় বলতে কতিপয় নেই। আপনি ধান ক্রয় করে ধানের গুদামে রাখার পরবর্তী দিন থেকে ধান বিক্রি করতে পারবেন এর জন্য আপনাকে কিছু ক্রিটিক্যাল আইডিয়া খাটাতে হবে যেমন – আপনি ধান ক্রয় এবং গুদামের সকল বাবদ যদি দেখেন মণ প্রতি ১০০ টাকা লাভ হয়েছে তাহলে আপনি ধান বিক্রি করার জন্য পারবেন এর জন্য আপনাকে সব সময় বাজার মনিটরিং করতে হবে। কারন ধানের বাজার সব সময় উঠানামা করে।
আপনি এক মৌসুমের ধান সর্বচ্চো ৪ মাস গুদামে রাখার জন্য পারবেন এর বেশিও রাখার জন্য পারবেন কিন্তু সাবধানে থাকতে হবে যেন ধানের ভিতরে পোঁকা মাকড় না ধরে। আর একটি বিষয় করবেন সব সময় সেটা হচ্ছে ইঁদুর থেকে সাবধান থাকতে হবে। মনে রাখবেন যে কোন খাবারের গুদামের প্রথম শত্রু হল ইঁদুর।
ধানে লস হতে দেখলে কি করবেন: একসময় দেখলেন আপনি যে দামে ধান কিনে ধানের গুদামে রেখেছেন তার থেকে বেশি দাম আর হচ্ছে না তখন একদমেই সহিষ্ণুতা হারাবেন না। আপনি তখন সেই ধানকে অধিক দামে বিক্রি করার জন্য অন্য পন্থা নির্ভর করুন। আপনি মনে করলেন যে ২ মাসের ভিতরে ধানের দাম অতিরিক্ত হওয়ার সম্ভবনা নেই। সেই সময় আপনি সেই ধানকে কোন চাউল কল ( চাতাল) এই নিয়ে ধানকে সিদ্ধ করে তা ভাঙিয়ে চাউল তৈরি করুন।
একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখার চেষ্টা করবেন সেটি হল ধানের তুলনায় চালের দাম বাজারে অনেক বেশি এইজন্য চাউল মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করলে লস হওয়ার সম্ভনা কম থাকবে। এছাড়াও ধান ভাঙ্গানোর সময় আলাদা তুষ বের হয় সেগুলো আপনি বস্তা সহকারে বিক্রি করবেন। তুষ মাছের ও গবাদি পশুর অন্ন হিসেবে বাজারে ব্যপক ডিমান্ড রয়েছে।
আটা হিসেবে বিক্রি করার জন্য পারেন: আপনি ধানকে আর একটি প্রক্রিয়া করে বিক্রি করতে পারবেন সেটা হল আটা সৃষ্টি করে। আটা সৃষ্টি করার ডিসিশন নিলে আপনাকে আগে থেকেই ডিসিশন নিতে হবে। কারন ধান থেকে চাউল করে তার হতে আটা প্রস্তুত করা হয় কিন্তুু ধান সিদ্ধ করা লাগবে না। তাই ধানকে সিদ্ধ না করিয়ে চাউল ভাঙ্গিয়ে আটা সৃষ্টি করার জন্য হবে। আপনি আটা প্রস্তুত করে বাজারে ভাল প্রচার করে বস্তা সহকারে বিক্রি করতে পারবেন কিংবা ১ কেজি করে প্যাকেট প্রস্তুত করে নিজের ব্রেন্ডিং এই নাম দিয়ে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে বিক্রি করার জন্য পারবেন আর তুষ তো হবেই বিক্রি করার জন্য।
ধানের ব্যবসায় লাভ ও ক্ষতি এবং ইনভেস্ট: জগতে এরূপ কোন বিজনেস নেই যে তার কোন লাভ লস নেই। প্রত্যেক ব্যবসায় লাভ লস বিদ্যমান তবে কম এবং বেশি। ধানের ব্যবসায় তুলনামূলক কম লাভ হলেও মজা আছে ব্যবসায়। আপনি চালু করতে থাকুন সেই সময় ধান ব্যবসার আনন্দ বুঝে যাবেন। আর লসের দিক কর্তৃক বলতেছি উপরে ২ টি নীতি বলা হয় দিয়েছি সে কথা অনুযায়ী কাজ করলে আপনি লস থেকে খালাস পাবেন।
আর নিয়তির ওপর নির্ভর করে বাকিটা! বিনিয়োগ এর কথা যদি বলি তাহলে শুরুটা ১০০ মণ ( ৪০ কেজি ১ মণ) ধরে চালু করার জন্য পারেন। গড়ে ধানের মন যদি ৫০০ টাকা হয় তাহলে ধান কিনতে আপনার ৫০ হাজার টাকা লাগবে। মোট কথা আপনি এক লক্ষ থেকে আরম্ভ করে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন। সেটি নিশ্চয়ই আপনাকে ধান ব্যবসায় নিপুণ হতে হবে। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন