ইসলামের প্রধান নামাজ। স্রষ্টা তাআলা ডেইলি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। জামাতে নামাজ পড়ার অনেকগুলো ফায়েদা রয়েছে। জামাতে নামাজ পড়ার উপকারিতাগুলো তুলে ধরা হলো-
১. আল্লাহ তাআলা নিজ দয়ায় উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য সময়ে সময়ে পরস্পর একত্রিত হওয়ার কতিপয় বিশেষ চান্স এবং সুব্যবস্থা করেছেন। যাতে তারা পারস্পরের খবরাখবর নিতে পারে। স্বার্থে সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে। পরস্পরের কথা এবং কাজে স্রষ্টা তাআলার নাজিলকৃত বিধানের দিকে সম্ভাষণ করার প্রচুর সুযোগ পায়। এই সুযোগগুলো কোনো সময়েই হয়ে যায় দৈনিক। যেমন- দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার সময়। আবার কক্ষনো তা হয় সাপ্তাহিক। যেমন- শুক্রবার জুমআর দিন মসজিদে গেলে। আবার কক্ষনো তা হয় বাৎসরিক ও আঞ্চলিক। যেমন- একই অঞ্চলের ঈদগাহসহ ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে একত্রিত হলে। আবার বাৎসরিক ও আন্তর্জাতিক। যেমন- নানারকম মুসলিম রাষ্ট্র থেকে সচ্ছল মুসলিমদের হজ্জ পালনে মক্কার আরাফার ময়দানে।
২. জামাতে নামাজ পড়া বিশেষ সাওয়াবের কাজ।
৩. জামাতে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে উপস্থিত হলে পরস্পরের সিচুয়েশন সম্যকরূপে জানা যায়। এর ফলে রুগ্ন ব্যক্তিদের সেবা করা, কমিউনিটির গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা ও মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন করার চান্স লাভ করা।
৪. জামাতে মসজিদে গেলে আত্মীয়- কাছে মানুষের খোঁজ খবরে নেয়া, এরিয়ায় নবাগত যে কোন মুসাফির ব্যাক্তিকেও সহজে জানা-শুনা ও ধর্মীয় প্রচার-প্রচারণার কাজের সুযোগ লাভ হয়।
৫. নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে প্রকৃতপক্ষে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলামের একটি বিশেষ নমুনা ‘জামাত’ প্রতিষ্ঠা হয়।
৬. নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষীদের সম্মুখে মুসলমানদের দাপট, শক্তি ও পরাক্রমশালীতা বিশেষভাবে ফুটে উঠে। এবং মুনাফিক এবং আল্লাহদ্রোহী শক্তি পর্যদুস্ত হয়।
৭. নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে প্রকৃতপক্ষে নামাজের বিধি-বিধানসহ আলিমদের কাছ হতে আইন সম্মন্ধে পর্যাপ্ত কিছুই জানার চান্স হয়।
৮. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হলে সমাজে যারা মসজিদে অনুপস্থিত থাকে তাদের সবাইকে মার্ক করে জামাতে আসার উপদেশ দেয়া যায়।
৯. জামাতে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের বিশেষ চান্স লাভ হয়।
১০. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ চান্স লাভ হয়।
১১. মসজিদে একত্রিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ইসলামের জন্য সীসাঢালা প্রাচীরের মতো সারিবদ্ধভাবে জিহাদ (ধর্মীয় কাজে প্রানন্তকর চেষ্টা) করার বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ হয়।
১২. মসজিদে প্রকৃতপক্ষে সমাজের ধনী-দরিদ্র্য, জনপ্রতিনিধি এবং জনতা পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাতের চান্স লাভ হয়। যাতে নিজেদের ভিতরে সোশাল সব বিষয়ে পরামর্শের অসাধারণ সুযোগও পাওয়া যায়।
১৩. মসজিদে প্রকৃতপক্ষে সমাজের রীতি বিমুখদের ধর্মের উপায় দেখানোর সুযোগ হয়।
১৪. জামাতে নামাজ পড়ার দ্বারা সাহাবায়ে কিরামের যুগের শিক্ষা উপায়ের অনুসরণ ও অনুকরণ হয়। যা দ্বীন শিক্ষার মূলনীতির একটি।
১৫. অধিক উৎকর্ষ সাওয়াবের আশায় জামাতে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়া মুসলিম উম্মাহর ওপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে ধারাবাহিক বরকত নাজিল হওয়ার ১টি বিরাট মাধ্যমও বটে।
১৬. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার দ্বারা সমাজের নিরলস ইবাদতকারীদের ইবাদাতের ক্লান্তি হীন উৎসাহ্- উদ্দীপনা দেখে অলসদের মাঝেও ইবাদতের স্পৃহা ও ইচ্ছা উদ্ভব নেয়।
১৭. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার দ্বারা নামাজ ছাড়া আরো অন্য কোনো ইবাদতের দ্বারা বহুগুণ সাওয়াবও অর্জন করা যায়।
১৮. মসজিদে জামাতে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে টাইমের প্রতি মর্যাদা দেয়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন